চার মাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত 'ফিরোজা'

চার মাস চিকিৎসা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ মঙ্গলবার সকালে দেশে ফিরছেন। তিনি কাতারের আমিরের সৌজন্যে পাঠানো একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়েছেন। দোহায় এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতি শেষে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার অবতরণের কথা রয়েছে।
বেগম জিয়ার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন তার দুই পুত্রবধূ—ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান—সহ আরও ১২ জন। জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই গাড়ি চালিয়ে খালেদা জিয়াকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন।
বেগম জিয়ার দেশে ফেরাকে ঘিরে বিমানবন্দর থেকে গুলশানের তার বাসভবন ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সড়কপথে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা জারি করেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের সড়কে ভিড় না করে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা হাতে শুভেচ্ছা জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। ছাত্রদের চলাচল ও জনদুর্ভোগ এড়াতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সুশৃঙ্খল উপস্থিতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার আগমনের খবরে তার গুলশানের বাসভবন 'ফিরোজা'তে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। দীর্ঘ ১৭ মাস পর তিনি এই বাসায় ফিরছেন। ইতোমধ্যে বাড়ির বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। বাসার ভেতর ও বাইরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা ও সজ্জার কাজ শেষ হয়েছে।
বাসভবনের মূল ফটকে স্থাপন করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যারিকেড, যেখানে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের সদস্যরা এবং ‘চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (CSF)’ এর নির্ধারিত সদস্যরা।
বেগম জিয়ার দেশে ফেরা বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে। কেন্দ্র ও শাখা পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দলের একাধিক নেতা বলছেন, ‘দেশনেত্রীর প্রত্যাবর্তন আমাদের জন্য প্রেরণার উৎস। তার উপস্থিতি রাজনৈতিক কার্যক্রমে নতুন গতি এনে দেবে।’
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার নিয়মিত চিকিৎসা চলে এবং ধীরে ধীরে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়।
বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানানো হয়েছে যেন সুশৃঙ্খল আচরণ বজায় থাকে এবং কোনো ধরনের জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়। একইসঙ্গে সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে নেত্রীকে স্বাগত জানানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।